The Ambassador News                                       দি অ্যাম্ব্যাসাডর নিউজ

সকল কণ্ঠের প্রতিনিধি

সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি এখন দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের খাদ্যনিরাপত্তার হালনাগাদ পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রতি ছয় মাস পরপর খাদ্যনিরাপত্তা–বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক। খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে ‘লাল’ শ্রেণিতে আছে বাংলাদেশ। গত এক বছরের খাদ্য মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি বিবেচনা করে বাংলাদেশকে এই শ্রেণিতে রেখেছে বিশ্বব্যাংক।

দেশের মূল্যস্ফীতি বেড়ে চলেছে

বাংলাদেশের মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে চলে গেছে সব ধরনের পণ্য। কোটা সংস্কার আন্দোলন ও সদ্য পদত্যাগী সরকারের দমনপীড়নে দেশব্যাপী যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছিল, তার প্রভাব পড়েছে সব পণ্যমূল্যে। সরবরাহ সংকটের কারণে উচ্চমূল্যে খাদ্যপণ্য কিনতে হয়েছে মানুষকে। ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি প্রথমবারের মতো দুই অঙ্ক টপকে এখন ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যেখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১ শতাংশ। এটি গত ১৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

আওয়ামী সরকারের শাসনের ফলে দ্রব্যমূল্যে নাভিশ্বাস উঠেছিল মানুষের। বিবিএসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা সঠিক তথ্য গোপন করে টেবিল ওয়ার্কের তথ্য দিচ্ছিল। গত জুনে সারা দেশে বন্যা হওয়ায় সব ধরনের পণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়, কিন্তু বিবিএস জানিয়েছিল, জুনে মূল্যস্ফীতি মাত্র ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। এবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রথম মূল্যস্ফীতির তথ্য দিয়েছে বিবিএস। এতে বলা হচ্ছে, দেশের গড় মূল্যস্ফীতি ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ দশমিক ১ শতাংশ; খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। 

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি এখন সর্বোচ্চ। সাম্প্রতিক ইতিহাসে দক্ষিণ এশিয়ায় উচ্চ মূল্যস্ফীতি ছিল শ্রীলঙ্কায়। সে দেশেই গত জুনে মূল্যস্ফীতি ছিল ২ দশমিক ৪ শতাংশ। পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতিও বাংলাদেশের চেয়ে কম। পাকিস্তানে জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ১ শতাংশ।  দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভারতে জুনে মূল্যস্ফীতি ছিল ৩ দশমিক ৫৪, একই মাসে মালদ্বীপে ছিল ১ দশমিক ৪, নেপালে ছিল ৪ দশমিক ১৭, ভুটানে এপ্রিলে ছিল ৪ দশমিক ৮৭ ও আফগানিস্তানের মূল্যস্ফীতি ছিল ঋণাত্মক ৭ দশমিক ৫ শতাংশ।  ২০০৭-০৮ অর্থবছরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে ২০০৫-০৬ সালকে ভিত্তি বছর ধরে বাংলাদেশের গড় মূল্যস্ফীতি ঠেকেছিল ১২ দশমিক ৩ শতাংশ আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি ঠেকেছিল ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশে।

২০০৭-০৮ অর্থবছরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে ২০০৫-০৬ সালকে ভিত্তি বছর ধরে বাংলাদেশের গড় মূল্যস্ফীতি ঠেকেছিল ১২ দশমিক ৩ শতাংশ আর খাদ্য মূল্যস্ফীতি ঠেকেছিল ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ঝুঁকিতে পড়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি। সে বছর ৫ আগস্ট হঠাৎ তেলের দাম বাড়ায় আওয়ামী লীগ সরকার। আগের মাস জুলাইয়েও যেখানে মূল্যস্ফীতি ছিল সাড়ে ৭ শতাংশ, আগস্টে তেলের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে। এরপর দেশের মূল্যস্ফীতি আর নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।  

সূত্র: প্রথম আলো, দেশ রূপান্তর। 

নবীনতর পূর্বতন