গ্যাসের সংকটে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। একইসাথে দেশের বড় তিনটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রক্ষণাবেক্ষণের কারণে আংশিকভাবে অথবা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। যার কারণে দেশে চরম বিদ্যুৎ সংকট তৈরী হয়েছে, এতে সারাদেশে লোড শেডিং দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে দেশের গ্রামাঞ্চলে তা বেড়েই চলেছে।
বাংলাদেশের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আমদানিকৃত কয়লার বেশিরভাগই আসে চীন ও ইন্দোনেশিয়া হতে। প্রতি ৬ মাস পর পর আমদানিকৃত কয়লার মূল্য পরিশোধের কথা থাকলেও তা প্রশাসনের ব্যাপক দূর্নীতির কারণে পরিশোধ না করতে পারায় কয়লার আমদানি নিয়েও ঝুকিতে আছে বাংলাদেশ। আর এতে দেশের অন্যান্য কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রও বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরী হয়েছে।
২০০৯ সাল থেকে ১১৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে পরিমাণ ক্যাপাসিটি পেমেন্ট পরিশোধ করা হয়েছে, সেই অর্থ দিয়ে অন্তত তিনটি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত।
এছাড়াও শীতের সময় পানি প্রবাহ তুলনামূলক কম থাকায় ও গ্যাসের উৎপাদনও কম হওয়ার কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বাকি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে উৎপাদন কমে যাবার আশঙ্কা রয়েছে, যেগুলো থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।
পূর্বে ভারতের ঝাড়খন্ডের আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদিত বিদ্যুতের ১০০ শতাংশ বিদ্যুৎ বাংলাদেশে সরবরাহের আইন থাকলেও ভারত সরকার তা সংশোধন করেছে। সেখান থেকে বাংলাদেশ ১৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করত, যা দেশের চাহিদার প্রায় ১০ ভাগের এক ভাগ।
দেশের প্রধান বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কেন্দ্রগুলো থেকে সরবরাহ কমেছে |
উল্লেখ্য, এসকল বিদ্যুৎ সরবরাহ দেশে বন্ধ হয়ে গেলেও বাংলাদেশের সক্ষমতা রয়েছে নিজ দেশের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা, তবে সেক্ষেত্রে তেলভিত্তিক কেন্দ্র হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে তার দাম ইউনিট প্রতি প্রায় ৩০ টাকা খরচ হতে পারে, যার ভর্তুকি মূল্য পরিশোধ দেশের অর্থনীতির জন্য ঝুকিপূর্ণ। তাছাড়া জ্বালানি তেলের সংকটও দেশে রয়েছে।
গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট দেশের উৎপাদন ব্যবস্থাকে মারাত্মক ঝুকির মধ্যে ফেলেছে, যার সরাসরি প্রভাব দেশের অর্থনীতিতে পড়বে। দেশের বিনিয়োগেও বাজে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এসকল সংকট মোকাবেলার জন্য দেশের মানুষকে প্রস্তত থাকতে হবে ও দ্রুত এর সমাধান খুঁজতে হবে।
সূত্র: The Daily Star, Sharebiz.