The Ambassador News                                       দি অ্যাম্ব্যাসাডর নিউজ

সকল কণ্ঠের প্রতিনিধি

কাস্টমস কর্মকর্তাদের সহায়তায় ভারতে পালাচ্ছে অপরাধীরা, সিসি ক্যামেরায় ধরা

অনলাইন ডেস্কঃ 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়ার পর থেকে দেশটিতে পালাতে শুরু করেছে বিভিন্ন অপরাধী। এক্ষেত্রে রুট হিসেবে বেশি ব্যবহার হচ্ছে বেনাপোল সীমান্ত। তবে অপরাধীদের পালানো রোধে সীমান্তে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। ভারতে ঢোকার আগে বিজিবি, পুলিশ, এনএসআই ও ডিজিএফআই সদস্যরা সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। ফলে এক সপ্তাহে বেনাপোল ইমিগ্রেশন কাস্টমস থেকে আটক হয়েছেন তিনজন। এতে অবশ্য সাধারণ যাত্রীদের যাতায়াতে কোনো সমস্যা নেই। এদিকে, ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে কাস্টমসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় অনেক অপরাধী পালানোর সুযোগ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ছবিঃ সংগৃহীত

জানা যায়,  ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা হস্তান্তর করে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে নানান অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। বিদেশ ভ্রমণে দেয়া হয় নিষেধাজ্ঞা। এতে সীমান্তে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করে বিজিবি। সীমান্ত পথের পাশাপাশি ইমিগ্রেশন কাস্টমসে পুলিশ ও সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা যাত্রীদের ওপর শুরু করে নজরদারি। এতে গেল এক সপ্তাহে বিজিবির হাতে আটক হন ৩ জন। তবে বিজিবি সতর্ক থাকলেও চেকপোস্ট কাস্টমসের অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে সখ্য করে অনেকে পালিয়ে যাচ্ছে ভারতে।



গত ২৩ আগস্ট কাস্টমসে একটি বন্ধ গেট খুলে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজিদ নওশাদ পল্লবকে ভারতে পালানোয় সহযোগিতা করেন কাস্টমসের সুপার শিবলী নোমান ও  কামরুন্নাহার। এ সময় বিজিবির সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তাকে আটক করা হয়। অবৈধভাবে গেট খুলে প্রবেশের ঘটনাটি ধরা পড়ে সিসি ক্যামেরায়।



এদিকে, বিভিন্ন পরিচয়ে পাসপোর্ট যাত্রী ছাড়াও ইমিগ্রেশন কাস্টমস ভবনে বহিরাগতদের বিচরণ রয়েছে। এদের মাধ্যমেও নানান অনিয়ম ঘটছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব নিয়ে মাথাব্যথা নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।



বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টমস হাউসের সুপারেনটেন্ডেন্ট মোকলেছুর রহমান জানান, তাদের দুই সহকর্মীর কথায় কাস্টমসের কর্মী অনিমা বন্ধ গেট খুলে দিয়ে পাসপোর্টধারী ৫ জনকে ইমিগ্রেশন ভবনে ঢোকায়। এদের মধ্যে একজন ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি। সিসি ক্যামেরায় সেটা দেখা গেছে। তবে বিষয়টি কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা খতিয়ে দেখছেন। এ ঘটনার পর থেকে ওই গেটটি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।



পাসপোর্টধারী প্রবির মিত্র জানান, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের পর ভারতে ঢোকার অনুমতি দেয়া হচ্ছে তাদের।

স্থানীয় ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, নিয়ম রয়েছে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবনে কর্তব্যরত বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের পাসপোর্ট দেখিয়ে পরে যাত্রীরা ভারতে ঢুকবে। কিন্তু শূন্যরেখায় বন্ধ থাকা ইমিগ্রেশন গেট খুলে আত্মীয় পরিচয়ে ভারতে পারাপার করেন কর্মকর্তারা। এতে ওই যাত্রীর ভ্রমণ ট্যাক্স কেটেছে কিনা বা যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশির সুযোগ আর থাকে না। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম হয়ে এলেও দেখার কেউ নেই।



বিজিবি অধিনায়ক সাইফুল্লা সিদ্দিকী জানান, অপরাধীরা যাতে ভারতে পালাতে না পারে, সে বিষয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরা ইমিগ্রেশনে পাসপোর্টধারীদের নজরদারিতে রাখছেন।



দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটি শার্শা উপজেলা শাখার সদস্য রুবেল হোসেন বলেন, ‘কাস্টমসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা অপরাধীদের ভারতে পালাতে সহযোগিতা করে বড় অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।’



গত এক সপ্তাহে আটক ব্যক্তিরা হলেন: যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজিব নওশাদ পল্লব, ঢাকার নবাবগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব হালদার ও ছুটি না নিয়ে পরিচয় গোপন করে ভারতে যাবার সময় বিজিবি সদস্য শাওন ঘোষ।

খবরঃ সময় টিভি

নবীনতর পূর্বতন