The Ambassador News                                       দি অ্যাম্ব্যাসাডর নিউজ

সকল কণ্ঠের প্রতিনিধি

সর্বাধিক পঠিত

পলিটেকনিকের ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতির দাবির প্রতিবাদে আন্দোলন

বিশেষ প্রতিবেদক

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সেমিনার, ছবিঃ দি অ্যাম্ব্যাসাডর নিউজ, ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট



সরকারি পলিটেকনিক ইন্সটিউটিউটে ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া ‘ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর’ পদের কর্মচারীরা ‘জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর’ পদে পদোন্নতির দাবি জানিয়ে যাচ্ছেন। এই দাবিতে সম্প্রতি উচ্চ আদালতে রিট আবেদনও করেন তারা। তাদের এই দাবির প্রতিবাদে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের দাবি, তাদেরকে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর হিসেবে পদোন্নতি দেয়া হোক। কিন্তু, দি অ্যাম্ব্যাসাডরের অনুসন্ধান এবং সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতেই প্রথমবারের মতো ডিপ্লোমাধারীদের বাইরে, অর্থাৎ, ভোকেশনাল কিংবা জেনারেলের শিক্ষার্থীদের এই পদে সুযোগ দেয়া হয় এবং খুব দ্রুততার সাথে নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়। পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মতে, এই নিয়োগের ফলে ডিপ্লোমা পাসকৃত শিক্ষার্থীদের সাথে অন্যায় করা হয়েছে। কারণ, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের কারিগরি দিকগুলোর জন্য এবং ল্যাব সংশ্লিষ্ট পদগুলোর কর্মচারী হওয়ার দাবিদার কেবল তারাই। সেখানে, সাধারণ স্নাতক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা কীভাবে সুযোগ পেয়েছিল সে প্রশ্নও রেখেছেন অনেকে। 

জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (টেক এবং নন-টেক) পদটি মূলত পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটদের শিক্ষকদের জন্য। এই পদের কর্মকর্তারাই কারিগরি শিক্ষা এবং পলিটেকনিকে পঠিতব্য অন্যান্য বিষয়সমূহ পাঠদান করে থাকেন। কিন্তু, স্পষ্টতই, ‘ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর’ পদটি ছিল ১৩ তম গ্রেডের একটি পদ, যেখানে, ওয়ার্কসপ এবং ল্যাবের যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। হঠাৎ করে, বিতর্কিত ঐ বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের পদোন্নতির দাবিকে ‘অযৌক্তিক’ বলছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের এক শিক্ষার্থী বলেন, যদি এই দাবি মেনে নেওয়া হয় তবে ডিপ্লোমাধারী শিক্ষার্থীরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কেননা, ‘জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর’ পদটিই আমাদের সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত সরকারি চাকরি। সেখানে ১৩ তম গ্রেডে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের পদোন্নতি আমাদের সাথে রীতিমতো মশকরা। চলতি বছরের ২৪ জুন চাকরি প্রত্যাশী ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরাও এক সমাবেশে একই কথা বলেন।


এর আগে ১৩ ও ১৫তম গ্রেডভুক্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর গং কর্তৃক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মামলায় রুল ইস্যু না করে বাদীদের দায়ের করা আবেদন (এনেক্স-আই) ৬০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আদেশ প্রদান করেন। এ প্রেক্ষিতে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রতিষ্ঠানের ক্যাডার বহির্ভূত গেজেটেড ও নন গেজেটেড (কর্মকর্তা-কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ মোতাবেক ১৩ ও ১৫তম গ্রেডভুক্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর (সপ/টিআর) পদ হতে ১০ম গ্রেডভুক্ত জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক/নন টেক) পদে পদোন্নতির সুযোগ নেই বলে আবেদনটি নিষ্পত্তি করেন।


তা সত্ত্বেও ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরগং হাইকোর্ট বিভাগে পুনরায় রিট পিটিশন দায়ের করলে হাইকোর্ট জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক/নন টেক) পদে নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর ৬ মাসের স্থগিত আদেশ প্রদান করেন। ফলে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের অধীনে প্রার্থীরা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে চূড়ান্ত ফলাফলের অপেক্ষা থাকা সত্ত্বেও জটিলতা দেখা দিয়েছে। পুনরায় ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর রিট পিটিশন দায়েরের প্রেক্ষিতে আদালতের স্থগিতাদেশের ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। যা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক স্বল্পতা নিরসন প্রক্রিয়ায় সরকারের উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হবে। 


নবীনতর পূর্বতন