হেড লাইনটায় একটু অবাক লাগছে কি? অবিশাস্য হলেও এমনটাই ঘটেছিল।
২০১৮ সালে কোটা বিরোধী আন্দোলনের সময় চার দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দে’র ব্যানারে ঢাবি উপাচার্যের কার্যালয় অবরোধ করে। বিকালের দিকে উপাচার্য বের হলে শিক্ষার্থীরা তাকে ঘিরে ফেলে ও পদত্যাগের স্লোগান দেয়। এমন পরিস্থিতিতে উপাচার্যের জন্য ত্রাতা হয়ে আসে ছাত্রলীগ। তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি আবিদ আল হাসানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে উদ্ধার করে তার কার্যালয়ের নিয়ে যায়। এসময় তারা অন্যান্য হলের নেতাকর্মীদেরও আসার নির্দেশ দেয়। পরে কয়েকশ ছাত্রলীগ নেতাকর্মী এসে বিভিন্ন দিক দিয়ে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা চালায়। দফায় দফায় রড ও লাঠি দিয়ে পেটায়। ইট,পাটকেল, কিল, ঘুষি চলতে থাকে। সাংবাদিক সহ ৪০ জন এর মত আহত হন।
তবে এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত হয় কুয়েত মৈত্রী হলের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা। একটি ভিডিও ফুটেজ তখন টেলিভিশন সহ সারাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যেখানে দেখা যায় এক নারী শিক্ষার্থীর চুল ধরে পাশে নিয়ে যান শায়লা। সেখানে "আন্দোলন কেন করলি, দেখে নিব" এসব বলে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ছিঁড়ে ফেলেন তার জামা। ভাগ্য ভালো তার জামার নিচেও কিছু আবরণ ছিলো। নাহলে কি পরিমাণ লাঞ্চিত হতেন সেই ছাত্রী!
ব্যাপারটি আলোচিত হলে শায়লা শ্রাবণকে রক্ষার্থে বেহায়ার মতো এগিয়ে ছাত্রলীগ নেতারাই। তারা বলেন শায়লা নাকি নিজেকে বাঁচানের জন্য এসব করেছে! কি ভয়াবহ মিথ্যা! নিজেকে বাঁচানোর জন্য অন্য মেয়ের জামা ছিড়ে!
শায়লা পড়ে ভাব ধরেন, তার উপর নাকি হামলা হয়েছে তিনি ঢামেকে ভর্তি। অথচ, ঢামেক এ গিয়ে শায়লা শ্রাবণী নামে কোনো ঢাবি শিক্ষার্থকে ভর্তি পাওয়া যায় নি।
এসব ছাড়াও সেবছরই ১৫ তারিখ ছাত্রলীগ শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের উপর হামলা চালায়। তখন এই শায়লা শ্রাবণী এনটিভি অনলাইনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক মামুন তুষারকে লাঞ্ছিত করে,ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে, মুঠোফোন ভাংচুর করার অভিযোগও পাওয়া যায়।
লেখক
- ফাইয়াজ মুহাম্মদ কৌশিক,
শিক্ষার্থী,
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়