ইতিমধ্যেই এই তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে যে হাসিনা সরকারের সময় বাংলাদেশ ইসরায়েল হতে তাদের কুখ্যাত পেগাসাস স্পাইওয়্যার ক্রয় করেছে।আল জাজিরার তদন্তে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ইসরায়েলের তৈরি নজরদারি সরঞ্জাম কিনেছে যা একসাথে শত শত মানুষের মোবাইল ফোন পর্যবেক্ষণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। সেখানে দেখা যায় যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২০১৮ সালে ব্যাংকক-ভিত্তিক মধ্যস্থতাকারীকে ব্যবহার করে ইসরায়েলি সরঞ্জামগুলি কিনেছিল এবং বাংলাদেশী সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ইসরায়েলি গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞদের দ্বারা হাঙ্গেরিতে প্রশিক্ষিত হয়েছিল।ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যম হারেৎজও বাংলাদেশের কাছে ইসরায়েলের প্যাসিটোরা কোম্পানির নজরদারি যন্ত্র রয়েছে।
https://images.app.goo.gl/gzX6bM5h1ZV8LdFc9 |
গত ৯ই আগস্ট, ২০২৪ তারিখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায় যে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি। এর পরদিন ১০ আগস্ট, ২০২৪ তারিখ সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবাইদুল হাসান ফুল কোর্ট মিটিং এর ডাক দেন এমন সময় যখন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস রংপুর সফরে যাচ্ছিলেন আর সেসময় শাহবাগে হিন্দু সম্প্রদায় তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করছিল।
এমন পরিকল্পনার কথা সামনে আসছে যে যখন ড. মুহাম্মদ ইউনুস হেলিকপ্টারে থাকবে তখন সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবাইদুল হাসান অন্তবর্তীকালীন সরকারকে অবৈধ ঘোষণা করবে আর ছাত্র জনতা বিল্পবের পতন ঘটাতে চাইবে। সংখ্যালঘু আন্দোলনের নামে তখন বিভিন্ন স্থানে হামলার পরিকল্পনার তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হতে থাকে আর নিজ সম্প্রদায়ের উপর নিজেরাই হামলা করেছে এমন ঘটনাও ঘটেছে। এসবে সরাসরি লাভবান হতো ভারতে অবস্থান করা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর ছাত্রদের হাইকোর্ট ঘেরাও আন্দোলনের ফলে ওবাইদুল হাসান পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় ও পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।
এর প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে কিভাবে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা প্রশাসনের ভেতরের এসব তথ্য পাচ্ছে যার পরিপ্রেক্ষিতে তার বসানো লোকেরা এমন পরিকল্পনা করে? এখান থেকে এমন প্রশ্ন উঠছে ভারত কি বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনাতে ও দেশের গুরত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের উপর নজরদারি চালাচ্ছে? হাসিনার সাথে ভারতের সুসম্পর্ক এমন ব্যাপারকে সমর্থন করে, যেখানে হাসিনার সরকার বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে ভারতকে যুক্ত করেছে এবং তিনি বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পেও ভারতীয়দের যুক্ত করেছে শেখ হাসিনা । বিভিন্ন সময়ে সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের ফোনালাপ ফাঁসসহ বিভিন্ন ভিডিও ও অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়া গোপন নজরদারিকে প্রমাণ করে।
গোপন এমন নজরদারি সিস্টেমগুলো বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তার উপর হুমকি সৃষ্টি করেছে এবং তথ্য পাচারের শঙ্কাকে বাড়িয়েছে। বিশেষ করে নিরাপত্তায় থাকা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের উপর নজরদারি প্রমাণ করে সাধারণ মানুষের উপর নজরদারি করা আরও সহজ।
সূত্রঃ Al Jazeera, Haaretz, StartAn Forces.