বিশেষ সংবাদদাতা
প্রতীকী ছবি, ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত |
প্রায় ৯ মাস আগে নিজ এলাকা থেকে অপহরণের পর
ধর্ষণের শিকার হয় ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের রঞ্জন চন্দ্র
বিশ্বশর্মার মেয়ে রুপালী রানী (১৪)। এই ঘটনায় মামলার প্রায় ৮ মাস পরও এজহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার
করতে পারে নি পুলিশ। মেয়ের অপহরণ এবং ধর্ষণে অভিযুক্তদের চোখের সামনে অবাধে চলতে
দেখে আতঙ্ক এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এই দরিদ্র সংখ্যালঘু পরিবার।
অপহরণের
পর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-১৪৮, ৪/১২/২০২৩) করা হলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ
কর্মকর্তারা উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন এই কিশোরীকে। এরপর বাবা নিজেই স্থানীয় এবং
পরিচিতদের সহায়তায় ৮ ডিসেম্বর ঢাকার কল্যাণপুর থেকে মেয়েকে আহত অবস্থায় উদ্ধার
করেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার পর মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে যান বাবা।
পরিবারের অভিযোগ, কিশোরী রুপালীকে অপহরণের পর পালাক্রমে নৃশংসভাবে ধর্ষণ করা হয়।
৩
জানুয়ারি বাবা বিশ্বশর্মা গৌরীপুর থানায় পুনরায় অভিযোগ দায়ের করলে সেটি ‘নারী ও
শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০২০)’ এর ৭/৯(১)/৩০ ধারাসমূহে এফআইআরভুক্ত হয় (গৌরীপুর থানা মোঃ নং- ০৪
(০১)/২০২৪, জিআর মোঃ নং- ০৪/২০২৪)। এই মামলার এজহারভুক্ত আসামিরা হলেন- মোঃ রিপন মিয়া (১৯), মোঃ
এমরান মিয়া (১৮) এবং মোঃ আরিফ মিয়া (১৮)।
আসামিদের সবাই মাওহা ইউনিয়নেরই বাসিন্দা। মামলার দীর্ঘদিন পরও আসামিরা গ্রেফতার না
হওয়ায় এবং দিব্যি এলাকায় ঘুরে বেড়ানোয় আতঙ্কিত এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা পরিবার
পুলিশ সুপারের কার্যালয়, ডিআইজি অফিস, আইজিপি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়র দৃষ্টি
আকর্ষণ করে আবেদনপত্র দাখিল করে। তবুও, নেয়া হয় নি কোনো ব্যবস্থা। বিশ্বশর্মার
অভিযোগ, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের আমলে পুলিশ কর্মকর্তারা স্থানীয়
চেয়ারম্যানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আসামিদের গ্রেফতার করা থেকে বিরত ছিলেন। জামিন
অযোগ্য অপরাধ করার পরও ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবার সংখ্যালঘু এবং দরিদ্র হওয়ায়
বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার অনেক চেষ্টাও করা হয় বলেও জানান তিনি।
কিশোরী
পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট এস এম দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তাদের সার্কেলে বারবার যোগাযোগ করি। তবুও, কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় নি। মামলার
সংযুক্তিসহ আবেদনপত্র দেয়া হলেও মেলে নি কোনো উত্তর। বিষয়টি ময়মমনসিংহ জেলার
সংশ্লিষ্ট গৌরীপুর থানার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নজরে আনলে
দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে বারবার তাগাদা দেন আদালত। তারপরও গ্রেফতার হয় নি
আসামিরা।
ডাক
বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২৯ জুলাই ডিআইজির কার্যালয়, আইজিপি এবং স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ে আবেদনপত্র প্রেরণ করে বাদী পক্ষ। তবে কোনো সাড়া মেলে নি। সরকার পতনের
পরও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয় নি পুলিশ।