The Ambassador News                                       দি অ্যাম্ব্যাসাডর নিউজ

সকল কণ্ঠের প্রতিনিধি

ঘন ঘন লোডশেডিং, সিরাজগঞ্জে ঘুরছে না তাঁত যন্ত্র

দু'দফা বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প হুমকির মুখে। বন্যার পর পুরোদমে কাজ শুরু হচ্ছিল পল্লীগুলোতে। কিন্তু শারদীয় দুর্গা পূজার আগে দিনে গড়ে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে ব্যাহত হচ্ছে এই শিল্পের উৎপাদন। সেই সঙ্গে রঙ ও সুতার অনিয়ন্ত্রিত বাজার ব্যবস্থা, সব মিলিয়ে চরম লোকসানের মুখে তাঁতিরা। তবে তাঁত শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে তাঁত বোর্ড।


সিরাজগঞ্জে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে তাঁত কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ছবি: সময় সংবাদ


রিংকু কুণ্ডু  




এক সময় সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর, চৌহালীসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার মানুষের ঘুম ভাঙতো হাতে তৈরি তাঁত যন্ত্রের খট খট শব্দে। তবে আধুনিক যন্ত্র প্রযুক্তির যুগে হাতে তৈরি তাঁত যন্ত্রের জায়গা দখল করে নিয়েছে ইলেকট্রিক তাঁত যন্ত্র বা পাওয়ারলুম। এসব পাওয়ারলুমে উৎপাদন ক্ষমতা হাতে তৈরি তাঁত যন্ত্রের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। তবে বর্তমানে ঘন ঘন লোডশেডিং এর ফলে চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই তাঁত শিল্পের উৎপাদন ব্যবস্থা।

চলতি বছর দু'দফার বন্যা পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় অসংখ্য তাঁত যন্ত্র। এতে লোকসানের মুখে পড়ে এই সঙ্গে জড়িত ৫ শতাধিক ব্যবসায়ী। বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠে যখন পুরোদমে কাজ শুরু হচ্ছিল পল্লীগুলোতে। ঠিক তখনই দিনে গড়ে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার লোডশেডিং এ ব্যাহত হচ্ছে এই শিল্পের উৎপাদন। প্রতি বছর শারদীয় দুর্গা পূজাকে কেন্দ্র করে এই সময়টায় বাহারি সব শাড়ি তৈরিতে কর্ম ব্যস্ত থাকে প্রতিটি তাঁত পল্লী। কিন্তু বর্তমানে লোডশেডিং এর ফলে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় অলস সময় কাটাতে হচ্ছে শ্রমিকদের। সেই সঙ্গে দফায় দফায় রঙ ও সুতার দাম বৃদ্ধি, সব মিলিয়ে চরম লোকসানের মুখে জেলার ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পটি।



তাঁত মালিক আলামিন হোসেন জানান, লোকসানের মুখে অনেক তাঁত ব্যবসায়ী ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছি। বন্ধ হয়ে গেছে অসংখ্য তাঁত কারখানা। এতে বেকার হয়ে পড়েছে অনেক তাঁত শ্রমিক। তাঁত শিল্পকে লোকসানের হাত থেকে রক্ষায় সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানান তিনি।

তাঁত বোর্ড সিরাজগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত লিয়াজো অফিসার ইকরামুল হক বলেন, তাঁতিদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সুপারিশ আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। তাঁত শিল্পের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে।

সিরাজগঞ্জের ৫ উপজেলার শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা তৈরির যন্ত্র রয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ। আর এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় ১২ লাখ মানুষ।
নবীনতর পূর্বতন