নিউজডেস্কঃ
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি কিশোরী স্বর্ণা দাসের (১৪) মরদেহ ৪৫ ঘণ্টা পর ফেরত দিয়েছে ভারতীয় পুলিশ। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দুই দেশের পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে স্থানীয় চাতলাপুর চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে ওই কিশোরীর মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
কুলাউড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিজয় প্রসাদ দেবনাথ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মরদেহ গ্রহণ করেন। এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষণ রায় বলেন, অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার পথে স্বর্ণা নামের ওই কিশোরী বিএসএফের গুলিতে মারা গেছে বলে জেনেছি।
গত রবিবার রাতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে স্বর্ণা দাস নিহত হয়। পরে তার মরদেহ বিএসএফ নিয়ে যায়। গত সোমবার রাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৪৬ ব্যাটালিয়নের একটি দল স্বর্ণাদের বাড়িতে গেলে খবরটি এলাকায় জানাজানি হয়।
মরদেহ হস্তান্তরের সময় বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিএসএফের কম্পানি কমান্ডারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এবং ইরানী থানার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে স্বর্ণার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছায়।
স্বর্ণা জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের পরেন্দ্র দাসের মেয়ে। সে স্থানীয় নিরোদ বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।
জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরায় থাকা বড় ভাইকে দেখতে গত রবিবার মায়ের সঙ্গে বাড়ি থেকে রওনা দেয় স্বর্ণা রানী দাস। একটি দালালচক্রের মাধ্যমে মেয়ে স্বর্ণাকে নিয়ে মা সঞ্জিতা রানী দাস রাত ৯টায় লালারচক সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ইরানি থানার কালেরকান্দি সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে পৌঁছালে বিএসএফ তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। গুলিতে কিশোরী স্বর্ণা মারা যায় এবং স্বর্ণার মাসহ কয়েকজন আহত হয়।
স্বর্ণার বড় ভাই কলেজছাত্র পিন্টু দাস বলেন, তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে স্বর্ণা সবার ছোট।
স্বর্ণার বাবা পরেন্দ্র দাস বলেন, সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত মেয়ের মরদেহ ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিল। রাতে বিজিবির একটি দল বাড়িতে এসে খবরটি জানায়। স্বর্ণার মরদেহ বিএসএফ নিয়ে গেছে বলেও জানায় তারা। পরে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে কম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের পর মরদেহ ফেরত পাওয়া যায়।
বিজিবির ৪৬ ব্যাটালিয়নের লালারচক বিওপির টহল কমান্ডার নায়েক ওবায়েদ বলেন, কয়েকজন বাংলাদেশি চোরাই পথে ভারতে যেতে চেয়েছিল। এর মধ্যে একজন বিএসএফের গুলিতে মারা যায়। পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিহত কিশোরীর মরদেহ দেশে আনা হয়।
খবরঃ কালেরকন্ঠ